মোঃআল-আমিন ,দৌলতখান প্রতিনিধি,
বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও তিন ছেলে চাকরি করেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় দৌলতখানে। বাবার নামের সাথে মিল থাকায় ভোলার দৌলতখান উপজেলার এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরি করছেন আলী আকবর।তিনি ভোলা সদর উপজেলা ভূমি অফিসে মিসকেস সহকারী পদে। আরও দুই ভাই আলী আজগর এবং মিজানুর রহমানও মুক্তিযোদ্ধা সনদে পুলিশে চাকরি করেন। বর্তমানে আলী আজগর বাংলাদেশ পুলিশের এএসআই পদে আছেন। প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা যায়,পিতা রুহুল আমিন কাজীর বাবার নাম ছেলামত কাজী,যার পৈতৃক বাড়ি দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ডাকাতিয়া মেগরা এলাকার কাজী বাড়ি। বর্তমানে তিনি ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নে আছেন। এই রুহুল আমিন কাজী একই ইউনিয়নের চর লামছি মৌজার কাজী রুহুল আমীন, পিতা-রুস্তম আলী কাজী। ১৯৬৯-৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার মুক্তিযোদ্ধার তথ্য চুরি করে নিজের পিতা ছেলামত কাজীর স্থানে টেম্পারিং করে রুস্তম আলী মুক্তিযোদ্ধা বলে যান।তারা দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিয়েছেন এবং তিন ছেলেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি পাইয়েছেন। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন, পিতা রুস্তম আলী কাজী এর বেসামরিক গেজেট নং-৬৫৬। লাল মুক্তিবার্তা (৬০৪০৭০০৯০), পরিচিতি নং-০১০৯০০০১২৮৪। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকার কোথাও আছমত আলী কাজীর ছেলে রুহুল আমিন কাজীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পাওয়া যায়নি। ভোলা সদর উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত আলী আকবরের ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেন্বর প্রকাশিত নিয়োগ আদেশ ও অন্যান্য কাগজপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে তিনি তার বাবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদপত্র জমা দেন। ওই সনদ ছিল কাজী রুহুল আমীন, পিতা মৃত কাজী রুস্তম আলী, গ্রাম চর লামছিপাতা, রাধাবল্লভ, দৌলতখান, জেলা ভোলা। অথচ তার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নাম: মো. রুহুল আমিন কাজী, জন্ম ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩, পিতার নাম ছেলামত কাজী, মাতার নাম ফিরোজা খাতুন, স্ত্রীর নাম ফরিদা খাতুন। ভোটার এলাকা চন্দ্র প্রসাদ ৪নং ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ভেলুমিয়া, উপজেলা ভোলা সদর। দৌলতখানের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বর্তমানে ঢাকায় থাকেন। তিনি ভোলা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।এ বিষয় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান জানান, এবিষয় তার জানা ছিল না। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।