এ.সি. ডি. অর্জুন,
দৈনিক ভোলাটাইমস্ ::
“জুলাই বিপ্লবে নিহত শহীদ শাজাহান এর নবজাতক ছেলে সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা দিবে ভোলা জেলার সিভিল সার্জন তথা স্বাস্থ্য বিভাগ। শহিদ শাজাহান তার ছেলের মুখ দেখে যেতে না পারলেও দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাই তার সন্তান ও পরিবারের পাশে ভোলার স্বাস্য বিভাগ সর্বদাই আছে এবং থাকবে”। কথাগুলো বলছিলেন ভোলার জেলারর স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিভিল সার্জন ডাঃ মনিরুল ইসলাম। শনিবার(২৮ ডিসেম্বর’২৪) ভোলা শহরের এশিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ২৭ ডিসেম্বর বিকাল সারে ৩ টায় জন্মগ্রণকরা শহিদ শাজাহান এর সদ্যজাত ছেলে সন্তান ‘ওমর’ কে দেখতে গিয়ে তিনি কথাগুলো বলছিলেন। এসময় ডাঃ মনির নবজাতক শিশুটিকে কোলে তুলে নেন এবং তার মা ও শিশুটির জন্য শীতের পোশাক ও নগদ অর্থ প্রদানসহ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং ক্লিনক থেকে বাসায় যাওয়ার পর শিশু ও তার মায়ের সকল প্রকার ওষুধ প্রদানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আন্তরিকতার সহিত শহিদ শাজাহান এর মা বিবি আয়শা সহ পরিবারের সকলের খোঁজ খবর নেন এবং মা ও শিশুটির স্বাস্থ্যের ভালোমন্দ সবসময় সিভিল সার্জনকে জানাতে বলেন। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে শিশু ওমর এর জন্য নগদ ১৪ হাজার টাকার আর্থীক সহায়তা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পাঠান তার নিজেস্ব এলাকা পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার কৃতিসন্তান প্রকৌশলী কাওসার নাইম ও তার কয়েকজন সহকর্মী। যার সাথে আরো ১ হাজার টাকা যোগ করে মোট ১৫ হাজার টাকার নগদ আর্থীক সহায়তা ডাঃ মনির তুলে দেন শহিদ শাজাহানের স্ত্রী ফাতিহার হাতে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদ শাজাহানের স্ত্রী ও শিশুটির মা ফাতেহা(২০) বলেন, “আমার স্বামী শাজাহান দেশের জন্য লড়াই করতে গিয়ে নিজের অনাগত সন্তানের মুখ না দেখেই দুনিয়া থেকে চলে গেছে। তাই আমার ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। কারন বৈষম্য বিরোধি ছাত্র আন্দোল তথা গণঅভ্যূত্থান-২০২৪ চলাকালে গত ১৬ জুলাই ঢাকার সাইন্সল্যাবের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আমার স্বামী শাজাহান”। উল্লেখ্য ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার ধলিনগর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইমান আলীর ছেলে শাজাহান ছিলেন ঢাকার বলাকা টাওয়ারের সামনের একজন ভাসমান ব্যবসায়ী। মারা যাওয়ার সময় তার স্ত্রী ফাতিহা প্রায় ৪ মাসের অন্তঃসত্বা ছিলেন এবং মেডিক্যাল রিপোর্টে ছেলে সন্তান আসার খবর শুনে অনাগত ছেলের নাম ওমর ফারুক রাখার জন্য তার স্ত্রীকে বলে গিয়েছেন বলে জানান তার স্ত্রী ফাতিহা। ভোলার সমন্বয়ক ও এশিয়া ডক্টরস পয়েন্টের ম্যানেজার আরিফ চৌধুরী এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় শিশুটিকে সিভিল সার্জন পরিদর্শন করার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।