
ভোলা প্রতিনিধি:
২২ লক্ষ মানুষের দ্বীপজেলা ভোলার প্রধান দাবি ভোলা–বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন এখনো আলোর মুখ দেখেনি। অথচ সেই দাবি উপেক্ষা করেই সরকার আবারও ভোলা থেকে অধিক পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগ ভোলার প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজিতে রূপান্তর করে ঢাকা ও আশপাশের শিল্প-কারখানায় সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি অন্তত নয়টি কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করলেও প্রাথমিক যাচাই শেষে চারটি প্রতিষ্ঠানকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে নির্বাচিত কোম্পানিগুলো ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে পারবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সরবরাহ ব্যাহত না হওয়ার জন্য উভয় প্রান্তে পাঁচ দিনের এলএনজি মজুদ সক্ষম অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানানো হয়েছে।
ভোলা থেকে এলএনজি আকারে গ্যাস পরিবহন ও সরবরাহের জন্য রাশিয়া, চীন ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক চারটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ইপি ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, চীনের চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি), সিএনপিসি চাংগিং ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং সিঙ্গাপুরভিত্তিক জিসিজি এলএনজি কোম্পানি।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে ভোলার গ্যাস শিল্প খাতে নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে ভোলায় শিল্পায়ন ও স্থানীয় জনগণের গ্যাস সংযোগ এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ভোলা থেকে সিএনজি আকারে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্ব পায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রাকো সিএনজি, যা দৈনিক প্রায় পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে—যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
এদিকে ভোলাবাসীর অভিযোগ, দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে ভোলার সম্পদ ব্যবহার করা হলেও ভোলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ভোলা–বরিশাল সেতু, শিল্পায়ন ও পর্যাপ্ত গ্যাস সংযোগ এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে নতুন করে গ্যাস নেওয়ার সিদ্ধান্তে দ্বীপজেলাজুড়ে ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সুর জোরালো হচ্ছে।
