

ভোলা টাইমস ডেক্স,
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপির) প্রতিষ্ঠাতা, আধুনিক ভোলার রুপকার সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মরহুমর নাজিউর রহমান মঞ্জুর ১৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৪৮ সালে ৩০শে জুন ভোলা সদরের ঐতিহ্যবাহী বালিয়া মিয়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নাজিউর রহমান মঞ্জু। ২০০৮ সালের ৬ই এপ্রিল তিনি লিভারে সমস্যা জনিত কারণে মাত্র ৬০ বছর বয়সে ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ ভোলার কৃতি সন্তান মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জুর স্মরণে মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি দোয়া, আলোচনা সভা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। এছাড়াও পারিবারিকভাবে মরহুমের জন্য দোয়া মুনাজাতের আয়োজন করা হয়। আজকের এই দিনে ভোলার কৃতি পুরুষ মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জুকে বিন¤্র শ্রদ্ধা জানাই।
তৎকালীন এলজিআইডি মন্ত্রী, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সফল মেয়র ও আধুনিক ভোলার রুপকার মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জু ১৯৪৮ সালের ৩০ শে জুন ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বালিয়া মিয়া পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম বজলুর রহমান মিয়া। ৪ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ২য়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এম.কম পাস করেছেন। প্রথম জীবনে মতিঝিলে তিনি এশিয়াটিক ট্রাভেলের সাথে জড়িত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। রাজনীতির ক্ষেত্রেও তিনি ছিলন সফল। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মাস সংসদের সাধারন সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সদস্য ও হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের ১৮ দফা বাস্তবায়ন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তৎকালীন সময়ে জাতীয় পার্টি (জাপা)’র মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চারদলীয় ঐক্য জোটের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) শরীক দল ছিলেন। তাছাড়াও ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পূর্বে নাম ছিল ঢাকা মিনিসিপাল কর্পোরেশন তা পরিবর্তন করে তার নাম দেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দেন। এরশাদের আমলে তিনি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় দফতরের মন্ত্রী। তিনি ভোলা জেলার সকলের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। তার জনহিতকর কর্মকা-ে ছোঁয়া পায়নি এমন এলাকা খুবই বিরল। ভক্তরা তাকে “হাতেম তাই” বলে সম্বোধন করতো। নিজের অর্থে নির্দিষ্ট সময়ে তিনি ব্যাপকভাবে জনসেবামূলক কাজ করেছেন। তার আশা-আকাঙ্খা ছিল অনেক। তিনি বলেছিলেন, ‘সুযোগ পেলে আমি ভোলাকে সিঙ্গাঁপুর বানিয়ে ছাড়ব’। তার কথার সাথে কাজের মিল রেখেই এগিয়েছেন তিনি। ভোলার উন্নয়নের স্বার্থে নিয়ে ছিলেন নানা রকম পরিকল্পনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়নও করেছেন অনেক কাজ।
১৯৮৬ সালে ভোলার এমপি নির্বাচিত হয়ে মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জু শিক্ষা বিস্তারে জোর দেন। তিনি মনে করেন একটি জাতি যদি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে তবে তারা অতিদ্রুত উন্নতি করতে পারবে। সেই লক্ষ্যে তিনি ভোলা শিক্ষার মান বিস্তারের জন্য ৪টি কলেজ ও ১০০ উপরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এর পাশাপাশি তিনি শিক্ষার অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভোলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নিয়ে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য একটি তহবিল গঠন করেন। এই তহবিল থেকে তিনি বিভিন্ন গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানসহ বিভিন্ন শিক্ষার উপকরন দিয়ে সাহায্য করতেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে তার নামে ভোলার উত্তরের পরানগঞ্জ বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ‘নাজিউর রহমান ডিগ্রি কলেজ’ জেলার মধ্যে অন্যতম বিদ্যাপিঠ হিসাবে গড়ে উঠেছে।