তৈয়্যবুর রহমান তুহিন, চরফ্যাশন প্রতিনিধি।
দৈনিক ভোলাটাইমস্ ::
গত ৫ ই আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামে চারটি গুলিবিদ্ধ হন ভোলার ছেলে আবুল খায়ের (২৫)। গুলিতে পেটের নাড়িভুঁড়ি বেড় হয়ে যায় তার। সেই সময় তার গ্রামের বাড়িতে খবর ছড়িয়ে পড়ে খায়ের মারা গেছেন। অথচ সে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকলেও তিনি ভালো নেই। হাসপাতালে দুইমাস চিকিৎসা শেষে শনিবার ভোলার চরফ্যাশনের গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসেছেন খায়ের। এদিকে চিকিৎসক জানিয়েছেন খায়ের সম্পূর্ণ ভালো হতে দীর্ঘ সময় লাগবে এমন কথা শুনে হতাশ হয়ে পড়েছেন তার দরিদ্র পরিবার। খায়ের উপজেলার চর মানিকা ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কেরামত আলী’র তৃতীয় নাম্বার ছেলে। তাঁরা সাত ভাই-বোন। রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে খায়েরের বাড়িতে গিয়ে সরজমিনে দেখা যায়,সে খাটের ওপর কাতরাচ্ছিলেন। পাশে হতাশা আর উদ্বিগ্ন হয়ে বসে আছেন তার মা-বাবা। ছেলে খায়ের সুস্থ হয়ে চাকরিতে ফিরতে পারবে কি না, এ নিয়ে চিন্তায় পরেছেন তাঁরা। মা হালিমা বেগমের চোখ থেকে অশ্রু ঝরছিল। গুলিবিদ্ধ আবুল খায়ের জানান, চট্টগ্রাম ওয়াশা সংলগ্ন জিএসসি মোড় স্বপ্ন সুপারশপ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সুপার ভাইজার হিসেবে কাজ করি। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণআন্দোলনে সাবেক স্বৈরাচার প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার খবর পেয়ে আনন্দে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিশে চট্টগ্রামে উল্লাস করছিলাম। বিকালে ছাত্র জনতার সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া বাঁধে একপর্যায়ে টিয়ারশেল ছোড়ে পুলিশ। ওই সময় চারটি গুলিবিদ্ধ হই আমি। তাও একটি গুলি বাম হাতের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে পেট দিয়ে বেড় হয়। পরে চারটি গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি করে। সেখানে রোগীর অতিরিক্ত চাপ থাকার কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও ভালো চিকিৎসা পাইনি। পরে ২২ আগষ্ট ভোলা ৪ আসনের সাবেক সংসদ নাজিম উদ্দীন আলম ভাইর সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সিএমএম হাসপাতালে নেওয়া হয় আমাকে। সেখানে প্রায় ৪৪ দিন চিকিৎসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে চলে আসছি।খায়ের আরও জানান, ১ বছর আগে আমি স্বপ্ন সুপারশফ চাকরি নেই। চাকরি করা অবস্থায় এই ঘটনা ঘটে। কবে তিনি সুস্থ হয়ে চাকরিতে ফিরবেন,তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। পেটের ও হাতের মাংস পচে গেছে। আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। উন্নত চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্য নাই পরিবারের। আমি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। এ জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। খায়েরের বাবা কেরামত আলী জানান,বড় স্বপ্ন ছিল ছেলেটা পড়ালেখা শেষে চাকরি করবে। কিন্তু সংসারের হাল ধরতে চট্টগ্রামে চাকরি করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমাদের সাজানো স্বপ্ন এখন শেষ হয়ে গেল। কবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে খায়ের তা জানি না। এবং তার ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন গোটা পরিবার। বর্তমানে আবুল খায়েরের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশবাসীর সহ বর্তমান সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন পরিবার।
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক- মোঃ আলী জিন্নাহ (রাজিব), ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক- মোঃ হেলাল গোলদার, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- আমানত পাড়া, ভোলা। ই-মেইল- [email protected], মোবাইল- ০১৭১১৪৬৯৫৩৯
Bhola Times © All rights reserved.