উপ-সম্পাদকীয়
তুহিন খন্দকার
যুগ্ম-সম্পাদক, দৈনিক ভোলা টাইমস্
ভোলা শিবপুর ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ড স্লুইসগেট এলাকার এক যুবতীর সাথে প্রেমের সুত্র ধরে সোমবার (১৭ নভেম্বর ২০২৫) এক চীনা যুবকের আগমনের খবর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাপক ভাইরাল হয়। কেউ রোম্যান্টিক গল্প বলছেন, কেউ বিস্ময়ের চোখে দেখছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনলাইনে পরিচয়ের সূত্র ধরে বিদেশি যুবকের আকস্মিক আগমনকে সরল প্রেমকাহিনি হিসেবে গ্রহণ করা এখন আর দায়িত্বশীলতার পরিচয় নয়।
প্রশ্ন হচ্ছে,
এটি সত্যিই ভালোবাসার টান, নাকি একটি সংগঠিত অপরাধচক্রের নীরব পা-ফেলা?
এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যেমন সরলতা, তেমনি বিপজ্জনকও। কারণ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রেম, বিয়ে ও অনলাইন-সম্পর্কের আড়ালে নারী পাচারের ভয়ংকর চক্র বহু বছর ধরে সক্রিয়। যারা জানে—তারা জানে, এই চক্রের প্রথম ধাপই হলো বিশ্বাস অর্জন। আর সেই বিশ্বাসের হাতিয়ার হচ্ছে অনলাইনের ‘প্রেম’।
সাধারণ পরিবারের এক মেয়েকে বিয়ের উদ্দেশ্যে কোনও বিদেশি যুবক হঠাৎ বাংলাদেশে চলে এলেন এটি কি সত্যিই হৃদয়ের টান, নাকি এর ভেতরে লুকানো আছে অর্থনৈতিক স্বার্থ, প্রতারণা কিংবা মানবপাচারের সমীকরণ?
এই অঞ্চলে মানবপাচারের ইতিহাস যেভাবে বিস্তৃত, তাতে শিবপুরের ঘটনাটিকে শুধুই প্রেমের গল্প ভাবা নিছক আবেগপ্রসূত সরলতা। বরং এটি একটি বড় প্রশ্নের দরজা খুলে দেয়—
আমরা কি যথেষ্ট সতর্ক? আমরা কি প্রমাণের চেয়ে গল্পকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি?
স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয় উপস্থিতি তাই শুধু প্রয়োজনই নয়—অপরিহার্য।
যে কোনও বিদেশি–বাংলাদেশি সম্পর্ককে এখন যাচাই-বাছাই, আইনি নথিপত্র পর্যালোচনা, উদ্দেশ্য পরীক্ষা এবং নিরাপত্তা–ঝুঁকির মূল্যায়ন ছাড়া গ্রহণ করা উচিত নয়।
এটি কারও স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ নয়; বরং সমাজকে সম্ভাব্য বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্বশীল পদক্ষেপ।
একটি বিষয় স্পষ্ট—
প্রেম সীমান্ত মানে না। কিন্তু অপরাধও মানে না।
সুতরাং আবেগ নয়, এখন প্রয়োজন বুদ্ধি, বাস্তবতা ও কঠোর সতর্কতা।
শিবপুরের ঘটনা আমাদের সামনে সেই সতর্কবার্তাই ফেলে দিয়েছে। এখন প্রশ্ন—আমরা কি সতর্ক হতে প্রস্তুত?
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক- মোঃ আলী জিন্নাহ (রাজিব), ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক- মোঃ হেলাল গোলদার, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- আমানত পাড়া, ভোলা। ই-মেইল- news.bholatimes@gmail.com, মোবাইল- ০১৭১১৪৬৯৫৩৯
Bhola Times © All rights reserved.