দৌলতখান প্রতিনিধি::
দৈনিক ভোলাটাইমস্ :: ভোলার দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে সেবা বঞ্চিত দৌলতখানবাসী। ডাক্তার না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগ চরমে। হাসপাতালে ডাক্তার না থাকা রোগীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে কোন ভূমিকা নেই সমাজের কর্তাব্যক্তি সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। উপজেলার প্রত্যন্তাঞ্চলের বিভিন্ন রোগবালাইয়ে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য হাসপাতালে এসে ডাক্তার না পেয়ে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এতে উপজেলার দুই লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর বাসস্থান দৌলতখান উপজেলা বাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিনদিন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নদী উপকূলীয় ও মেঘনার ভাঙনে নিঃস্ব হত দরিদ্র অসহায় মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবার ভরসা এ হাসপাতালটি। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে ডাক্তার না থাকায় এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। চিকিৎসা সেবা বেহাল অবস্থা থাকায় উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় মাসের পর মাস পার করছে হত দরিদ্র দুস্থ পরিবারের রোগাক্রান্ত পরিবার গুলো। সরেজমিন রবিবার২৭ এপ্রিল গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের উপচে পড়া ভীর। ডাঃ নয়ন চন্দ্র ঘোষ নামে মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার ইমারজেন্সি বিভাগে বসে রোগী দেখছেন। উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নচরশুভী ০৫ নং ওয়ার্ডের পঁচাত্তর বছর বয়সী ইউসুফ হাজারী জানান, সকাল নয়টায় হাসপাতালে এসেছিলেন হাটু কোমড়ের ব্যথা নিয়ে। ডাক্তার না পেয়ে দুই ঘন্টা অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন ব্যথা যন্ত্রণা নিয়ে। চরখলিফা ইউনিয়নের পঁয়ত্রিশ বছর বয়সের বিবি মরিয়ম জানিয়েছেন, এসেছিলেন চিকিৎসা নিতে। ডাক্তার না পেয়ে তাকেও হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। শুধু ইউসুফ হাজারী ও বিবি মরিয়মই নয় হাসপাতালে এসে ডাক্তার না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হেলিপোর্ট এলাকার নাজমা বেগম, আজিমউদ্দিন পাটওয়ারি বাড়ি এলাকার মিনারা বেগম, সরকারি দিঘির পাড় এলাকার রুমা বেগম, নাজিম উদ্দীন, রফিকুল ইসলাম সহ অনেক রোগী। হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ মোহাম্মদ বশির জানান, মেডিকেল অফিসার ৮ জন ডাক্তারের মধ্যে বর্তমানে হাসপাতালে কর্মরত আছে মাত্র ১ জন। কাগজে-কলমে দুইজন থাকার কথা থাকলেও আরেকজন মেডিকেল অফিসার রমজানের ছুটিতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। কনসালটেন্ট পদ ১০ টি থাকলেও ১ জনও নেই। ৩০ জন নার্সের পদে আছে ১০ জন। ১ জন বিদেশে এবং ৩ জন ছুটিতে আছেন। এক্সরে ১ জনের পদ থাকলেও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট পদ শূন্য। প্যাথলজিতে ৩ জনের স্থানে আছে ২ জন। ফার্মাসিস্ট পদে দুইজন থাকার কথা থাকলেও ১ জনও নেই। টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) পদে ১ জন ও মেডিকেল ফিজিওথেরাপি পদে ১ জন করে থাকার কথা থাকলেও তাও নেই। স্বাস্থ্য সহকারী ৩৫ জনের আছে ১০জন।সোমবার ২১ এপ্রিল হাসপাতালে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনিসুর রহমানকে পাওয়া যায়নি। ফোন করে জানা যায় তিনি ছুটিতে আছেন। বৃহস্পতিবারে আসবেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আনিসুর রহমান জানান, প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও জরুরি বিভাগে ২ শত থেকে ২ শত ৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসক সংকটে আমাদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। রবিবার ২৬ এপ্রিল দুপুর ১ঃ১৫ মিনিটের সময় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কে মোবাইলে একাধিক বার ফোন করে পাওয়া যায়নি।
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক- মোঃ আলী জিন্নাহ (রাজিব), ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক- মোঃ হেলাল গোলদার, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- আমানত পাড়া, ভোলা। ই-মেইল- [email protected], মোবাইল- ০১৭১১৪৬৯৫৩৯
Bhola Times © All rights reserved.